১. ক্ষুদ্রঋণ
সদস্যদের সঞ্চয়, সংস্থার উদ্বৃত্ত তহবিল, ব্যক্তি পর্যায়ে স্বল্পমেয়াদী ঋণ এবং ব্যাংক ঋণ নিয়ে এই সংস্থা ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের মূল উদ্দেশ্য হলো দারিদ্র বিমোচন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, ব্যবসা সম্প্রসারণ, হতদরিদ্র মানুষের উন্নয়ন ঘটানো, প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকদের ঋণ সহায়তা প্রদান করা এবং সর্বোপরী ক্ষমতায়নের মাধ্যমে নারী সমাজের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা। জুন ২০২২ পর্যন্ত কর্মএলাকায় ১১টি শাখা অফিসের মাধ্যমে ১১৪৪৪ জন সদস্যকে আর্থিক সহযোগীতার পাশাপাশি বিভিন্ন সেবা প্রদান করা হচ্ছে। ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের আওতায় ২০২১-২২ অর্থ বছরে ঋণ বিতরণের পরিমাণ ৩৭,৪৫,৪৮,০০০/- টাকা। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে ৫৫ কোটি টাকা।
সঞ্চয় : এই সংস্থা সদস্যদের ঋণ প্রদানের চেয়ে সঞ্চয়ের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হওয়ার বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। সঞ্চয়ের মাধ্যমে মানুষ উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড গ্রহণে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। এলক্ষ্যে প্রতিটি সমিতিতে মাসিক সচেতনতা সভার মাধ্যমে সঞ্চয়ের প্রয়োজনীয়তা, সঞ্চয়ের কৌশল, বিপদের সময়ে সঞ্চয়ের ব্যবহার, বিভিন্ন আয়বর্ধক প্রকল্পে সঞ্চয়ের টাকার ব্যবহার ইত্যাদি নানান বিষয়ে সদস্যদের সচেতন করে তোলা হয়।
ঋণ : মানব সেবা অভিযান দরিদ্র ও পিছেয়ে পড়া মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৯৯ সাল থেকে ক্ষুদ্র পরিসরে ঋণ কার্যক্রম শুরু করে। শুরুতে মাসিক ভিত্তিতে ঋণের কিস্তি আদায় করা হতো। বিভিন্ন বাস্তবতার কারনে ২০০৩ সাল থেকে মাসিক কিস্তির পাশাপাশি সাপ্তাহিক কিস্তির মাধ্যমে ঋণ আদায় শুরু হয়। বাংলাদেশ সরকারের বিধিবিধান মোতাবেক আমাদের সংস্থা ২০০৮ সালে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরী অথরিটি (এমআরএ)-এর সনদ প্রাপ্ত হয়। বর্তমানে এমআরএ-এর নীতিমালা অনুযায়ী ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচী পরিচালিত হচ্ছে।
২. সূদমুক্ত শিক্ষা ঋণ
একাদশ বা তদূর্ধ্ব শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ব্যাংক বা প্রতিষ্ঠান থেকে বৃত্তি এবং শিক্ষাঋণ প্রদান করা হয়। কিন্তু নবম ও দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য এরূপ কোনো সহায়তা নেই। এইজন্যই বিশেষ করে নবম ও দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠুভাবে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাবার জন্য এই সংস্থায় ২০১৪-২০১৫ অর্থবছর থেকে সুদমুক্ত শিক্ষাঋণ কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ৫১ জনকে ৩,০৬,০০০/- টাকা এবং এ পর্যন্ত ১০৩৯ জন শিক্ষার্থীকে সর্বমোট ৬২,৩২,০০০/- টাকা সুদমুক্ত শিক্ষা ঋণ প্রদান করা হয়েছে।
৩. দুস্থ প্রতিবন্ধীদের আয় বৃদ্ধির জন্য সূদমুক্ত ঋণ কর্মসূচি
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিগণ আমাদের দেশ তথা সমাজের বোঝা নয় বরং একটু সহযোগিতা পেলে তাঁরাও আর দশজনের মত স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে-এ সত্যকে সামনে রেখেই সংস্থা নিজস্ব অর্থায়নে ২০০৯ সাল থেকে সূদমুক্ত প্রতিবন্ধী ঋণ সহায়তা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। কর্মএলাকার দুস্থ প্রতিবন্ধী ভাই-বোনেরা সূদমুক্ত ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে আয়বৃদ্ধিমূলক কাজে সম্পৃক্ত হয়ে মর্যাদার সাথে পরিবারে অবদান রাখছেন। ফলে পরিবার ও সমাজে তাদের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ৯ জনকে ৪৫,০০০/- টাকা এবং এ পর্যন্ত ২৪৬ জন দুস্থ প্রতিবন্ধী সদস্যের মাঝে ১১,৩০,০০০/- টাকা সুদমুক্ত ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। প্রতিবন্ধীগণ পরিবারের বোঝা না হয়ে যেন নিজেদের স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে পারেন এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই আমাদের এই প্রচেষ্টা।
© Manab Seba Ovijan, All rights reserved. | Developed by: ITHostPark